স্টাফ রির্পোটার: নগরীর আড়ংঘাটা থানাধিন লতা বাইপাসে বেপরোায়া মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী স্টোরকিপার মো. দেলোয়ার হোসেনের জানাযা শেষে তার গ্রামের বাড়ী ফকিরহাটে দাফন করা হয়েছে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের চালক আড়ংঘাটা বাজারের টেইলার্স মাষ্টার শাহিন শেখের পুত্র যশোর সেনানিবাসে কর্মরত সেনা সদস্য মো. তানভীর আহমেদের(২২) অবস্থা আশংকাজনক অপর যাত্রী একই এলাকার দিনমুজুর রাভি(২৩) প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছে। গতকাল শনিবার নিহত দেলোয়ারের মরদেহ তার কর্মস্থলে নিয়ে আসলে প্রতিষ্ঠানে জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল দুটিকে আড়ংঘাটা থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাগেছে, খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী স্টোরকিপার মো. দেলোয়ার হোসেন শুক্রবার বাগেরহাটের ফকিরহাটে তার গ্রামের বাড়ীতে অসুস্থ মা’কে দেখে খুলনার ফুলবাড়ীগেটের বাসায় ফিরছিলেন। আড়ংঘাটা থানাধিন বাইপাসের লতাখামার এলাকায় আসলে মাগরিবের আযান শুনে তিনি পার্শবর্তি লতা দারুস সালাম জামে মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য তার মোটরসাইকেলটি বাক নিলে বিপরীতমুখি বেপরোয়া দ্রতগামী মোটরসাইকেললের(এপাসি ফোরবি) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুটি মোটরসাইকেলের তিনজন গুরুতর আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী স্টোর কিপার মো. দেলোয়ার হোসেন মৃত ঘোষনা করেন। আহত আড়ংঘাটা বাজারের দর্জী মাষ্টার শাহিন শেখের পুত্র সেনা সদস্য তানভীর আহমেদ ও আড়ংঘাটা বাইপাসের রাভিকে গুরুতর আহত অবন্থায় ভর্তি করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরের পর নিহত মো. দেলোয়ার হোসেনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দীর্ঘদিনের তার কর্মস্থল টিটিসিতে নিয়ে আসা হয়। দেলোয়ার হোসেনের লাশ ক্যাম্পাসে পৌছালে সহকর্মী এবং স্বজনদের কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠে। প্রতিষ্ঠান জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে খূলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গেট সম্মুখে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার পুর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম ও নিহতের ছোট ভাই মো. মিজানুর রহমান।
জানাযায খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ এ.কে.এম মনিরুল ইসলাম, সাবেক অধ্যক্ষ রিয়াজ শরীফ, টিটিসি’র ইনেন্সটেক্টর মো. শামুছূল আলম খান, সৈয়দ কামাল হোসেন, খন্দকার আসাদুজ্জামান, রুহুল আমিন, মাহবুবুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন, রেজাউল করিম, মো. দেলোয়ার হোসেন, মহিলা টিটিসির বাকী উল্লাহ, মো. তৌহিদুর রহমান, মো. শাহিনুর রহমান, যশোর টিটিসি’র মোজাফফর হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য জিএম এনামুল কবির, খানজাহান আলী থানা আ’লীগ নেতা মাস্টার শাহজাহান হাওলাদার, গোলাম রব্বানী, যশোর টিটিসির মো. বুলবুল আহমেদ, ইঞ্জি. মো. জুয়েলসহ পুরুষ ও মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। জানাযার ইমামতি করেন টিটিসি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইদ্রিস আলী। পরে মরহুমের গ্রামের বাড়ী বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে মাগরিববাদ দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতা ও পুত্রের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। অপরদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত সেনা সদস্য তানভীন আহমেদের অবস্থা আশংকাজনক বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন। স্বজনরা জানায় ডাক্তার জানিয়েছে তার মাথায় আঘাতের কারনে রক্ত বমি করছে তিনি আশংকামুক্ত নয়।
নিহত দেলোয়ার হোসেন ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদান করেন, আগামী ২০২৬ সালে তার অবসরগ্রহণের কথা ছিল। নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী, অষ্টম শ্রেনী পড়–য়া দোলা নামের ১৪ বছরের একটি কন্যা এবং মাদ্রাসায় হেফজ পড়া জারিফ নামের ৯ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
(1)