খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধিঃ খুলনার বহৃল আলোচিত রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় দীর্ঘ একমাস জেল হাজতে থাকা মহিউদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, জুয়েল ও পলাশকে মহানগর দায়রা জজ আদালত আজ মঙ্গলবার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশের পর সন্ধ্যার পর খুলনার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসেন মিথ্যা মামলায় আটককৃত চারজন।
জেলগেট থেকে এলাকার সর্বস্থরের মানুষের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় তাদেরকে বরণ করে নেয়। মুক্ত হয়ে মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করা ব্যক্তিরা মরিয়ম মান্নানসহ তার পরিবারের গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরায় দেশের সকল মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। মামলার অপর আসামী হেলাল শরীফ এখন জেলহাজতে রয়েছে বলে জনাগেছে।
মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ী গ্রাম থেকে গত ২৭ আগস্ট রাতে রহিমা বেগম রহস্যজনক নিখোঁজ হলে তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি অপহরণ মাামলা করে। মামলায় হেলাল শরীফকে ৩০ আগস্ট, প্রতিবেশী কুয়েটের সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জি, মো. গোলাম কিবরিয়া. ব্যবাসায় মহিউদ্দিন, ব্যাবসায়ী জুয়েল ও সরকারি চাকুরীজীবি রফিকুল ইসলাম পলাশকে পুলিশ ডেকে নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর এবং সর্বশেষ নিখোজ রহিমা বেগমের স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওরফে বেল্লাল ঘটককে ১২ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে রহিমা বেগমকে আইন শৃংখলা বাহিনী গত ২৪ সেপ্টেম্বর জীবিত ও অক্ষত অবন্থায় উদ্ধার করে ঘটনার রহস্য উন্মচোন করে। এ বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই খুলনা পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, নিখোজ হওয়ার পর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি ঘটনাস্থলের পারিপার্শিক অবন্থা এবং ভিকটিম উদ্ধার অভিযান সহ সার্বিক পরিস্থিতি রহিমা বেগম অপহরণ হয়েছে এমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি। রহিমা বেগমকে এই মামলায় আটককৃতরা অপহরণ করেছে এমন কোন তথ্য প্রমাণ তদন্তে এখন পর্যন্ত পাইনি বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর বিভিন্ন সময়ে যে তথ্য দিয়েছে তার মধ্যে অনেক গড়মিল রয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে যদি মনে হয় মামলাটি মিথ্যা তা হলে মামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়ও মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা যদি মনে করেন মামলা করবেন তাও করতে পারেন।
খুলনার বহুল আলোচিত মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ীর রহস্যজনক নিখোঁজ রহিমা বেগমের কথিত অপহরণের মামলায় কারাগারে আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে নি.শ্বর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মরিয়ম মান্নান, আদুরী আক্তার, মিরাজ হোসেন সাদীসহ ঘড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী এলাকার রাজনৈতিবীদ সুশিল সমাজসহ সর্বস্থরের মানুষের রাজপথে আন্দোলনে নামেন। বৃহত্তর মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ী এলাকাবাসীর উদ্যোগে গতকাল ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় খুলনা যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেট বাসষ্টান্ড চত্বরে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খুলনা প্রেস ক্লাবে একই দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেন আটককৃতদের স্বজনরা।
ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে থাকা ৬ আসামীর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন মামলার ৬জনের মধ্যে চারজনকে জামিন প্রদান করেন। পরে সন্ধ্যায় গোলাম কিবরিয়া, মহিউদ্দিন, জুয়েল ও পলাশ জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। জেলগেটে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুক্তি পওয়া গোলাম কিবরিয়া ও জুয়েল আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখ সুক্রিয়া আদায় করে বলেন মরিয়ম মান্নান সহ তার পরিবারের যে কতটা নিচে নামতে পারে তা দেশবাসী দেখেছে। তারা আইন শৃংখলা বাহিনীকে নিয়েও যে তামাশায় পরিনত করেছে তাও মিডিয়ার মাধ্যমে সারা দেশবাসী উপভোগ করেছে। গোলাম কিবরিয়া বলেন মিডিয়ার জন্য আজ প্রকৃত সত্য ঘটনায় দেশবাসী দেখেছে এ জন্য সকল প্রিন্টি ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানাই একই সাথে আমরা আশা করি যারা মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলেছে যারা আইন শৃংখলা বাহিনীর সম্মান নিখে খেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা প্রশাসন অবশ্যই গ্রহন করবে এবং আমরা যারা তার ষড়যন্ত্রের স্বিকার হয়েছি তারাও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
(24)