রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্য হল ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিল, নির্বাচনকে বন্ধ করতে চেয়েছিল। বিএনপি নেত্রী ঘোষণা দিলেন এই সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। উনি থাকলেন অফিসে। প্রায় ৬৫ জন মানুষ নিয়ে উনি তিন মাস গুলশান অফিসে থাকলেন। উনি এখন পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করেন নাই। অবরোধ এখনো আছে।’
সোমবার রাতে দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবরোধের নামে উনি প্রায় ৫০০ মানুষ হত্যা করলেন। সাধারণ জনগণ যারা বাসে চড়েন, ট্রেনে চড়েন, প্রাইভেটকারে চড়েন; উনার হাত থেকে কেউ বাদ যাননি। প্রায় ২ হাজার ৫৮৩টি গাড়ি উনি পুড়িয়েছেন। ১ হাজার ১৩৮টি প্রাইভেটকার, ১৮টি রেল, ৮টি লঞ্চ পুড়িয়েছেন। এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন বাংলাদেশে।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষ হত্যা করা আর সাধারণ মানুষের সম্পদ ধ্বংস করা রাজনীতি হয় কীভাবে? এরপর উনি বিদেশ গেলেন। তারপর দেখি বাংলাদেশে বিদেশীরা হত্যা হচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সক্রিয় এবং তারা কাজ করে যাচ্ছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ করতে না পারলে এই দেশ অভিশাপমুক্ত হতে পারবে না। এই বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে বলে বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হতে পারছে। অভিশাপমুক্ত হতে পারছে বলেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আইএস আছে, জঙ্গি আছে— এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার একটা পাঁয়তারা চলছিল। যে সব দেশ বাংলাদেশে আইএস আছে বলার চেষ্টা করছে তাদের অবস্থার তুলনায় ৫৪ হাজার বর্গমাইলের দেশে আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে পেরেছি। যেখানে খালেদা জিয়ার আমলে প্রতিদিনই খুন-খারাবি লেগেই থাকত, সেখান থেকে আমরা ধীরে ধীরে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় যাচ্ছি। পৃথিবীর অনেক মুসলিম অধ্যুষিত দেশেই কোনো না কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশই এখন অনেকটা নিরাপদ আছে।’
বাংলাদেশে আইএস বা জঙ্গিরা যেন আশ্রয় না পায় সে জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে যত ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রোধ করতে পারবে না। আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ নয়, উচ্চ আয়ের দেশেই পরিণত হব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধ সত্ত্বেও আমরা ৬ দশমিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় দেড় কোটি বেকারকে আমরা কর্মসংস্থান দিতে সক্ষম হয়েছি। ৩৮ লাখের মতো বিদেশে পাঠিয়েছি। ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল সারা বাংলাদেশে করব। সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী এই শিল্প গড়ে তুলতে চাই। তাহলেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যে এলাকায় যে পণ্য উৎপাদন হয়, সেগুলোকে সংরক্ষণ করার বিষয়ে কাজ করবে। দারিদ্র্যের হার ১৪ ভাগে নামিয়ে আনব। এখন আর কেউ বাংলাদেশকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে পারে না।
(2)