আসাফুর রহমান কাজল
কেসিসি’র ওয়ার্ড অফিসের কর্মচারীদেরকে দিয়ে জনগনের কাজ নয় নিজের বাড়ির কাজ করান বর্তমান কাউন্সিলর। এছাড়া এলাকার সকল উন্নয়ন কাজে তার আত্মীয় এবং নিজের লোক থাকে ঠিকাদার। গরীবের জন্য বরাদ্ধকৃত সকল ভাতা কার্ডও নিজের লোকেরা পায় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। যদিও বর্তমান কাউন্সিলর বলেন, সমবন্টন এবং এলাকাবাসীর উন্নয়নে কাজে করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
জানাগেছে, খুলনা সিটি কর্পোরেশনর (কেসিসি) ৪ নং ওয়ার্ড। যার পূর্বে পাবলা, ৬ ও ৫ নং ওয়ার্ড। পশ্চিমে আড়ংঘাটা, ক্ষুদের খাল। উত্তরে দৌলতপুর থানা এবং দক্ষিণে রায়েরমহল ব্রিজ ও লিংক রোড। ওয়ার্ডে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার।
বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ কবির হোসেন কবু মোল্লা জানান, করোনাসহ নানা সমস্যা আর প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এলাকায় উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এ ওয়ার্ডে সমস্যা রয়েছে অনেক। পর্যায়ক্রমে সেই সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করছি। জনগণের সমর্থণ আছে বলেই আমি আছি। আমি মনে করি জনগনের কাছে দেয়া আমার ওয়াদার প্রায় সবই পুরণ করেছি। কিছু কাজ বাকি রয়েছে তাও টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাবেক কাউন্সলর মো. আশরাফ হোসেন জানান, রাস্তাঘাটের তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। মাদক নির্মূলে কাউন্সিলরের কোন উদ্যোগ নেই। এলাকায় কোন ডাস্টবিন নেই। সড়ক বাতির সল্পতা রয়েছে। গরীবের ভাতাগুলো সমবন্টন হয় না। কেসিসি’র লোক বা কর্মচারীদেরকে দিয়ে ওয়ার্ডেরে কোন কাজা করান না বরং নিজের বাড়ির কাজ করান বর্তমান কাউন্সিলর। আর যতুটুকু উন্নয়ন কাজে হয়েছে সেই সব কাজের ঠিকাদার তার আত্মীয় আর নিজের লোক। ফলে কাজের গুণগত ঠিক নেই। এলাকাবাসী যথেষ্ঠ ভাল বলেই তাকে কিছু বলে না। তবে এবার জনগণ ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিবে। আমি নির্বাচিত হলে এলাকায় যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানে এলাকার বেকার যুবকদেরকে চাকুরীর সুযোগ তৈরির ব্যবস্থা করবো।
আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু জানান, ওয়ার্ডে অনেক সমস্যা রয়েছে। দিন দিন সেইসব সমস্যা বড় আকার ধারণ করছে। মানুষ এখন সচেতন। ভালমন্দ বোঝে। ফলে এলাকায় কি কাজ হচ্ছে তার মান কেমন, তা মানুষ দেখছে। এলাকার সকল কাজে কাউন্সিলরের আত্মীয় আর নিজের লোক। এসব থেকে এলাকাবাসী এবার মুক্তি চায়।
যুবনেতা মোঃ জামিরুল ইসলাম বন্দ জানান, ওয়ার্ডের অবহেলিত, নির্যাতিত মানুষের পাশে আমি ছিলাম এবং আছি। মাদক, জলবদ্ধতা, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নান সমস্যা এ ওয়ার্ডে। এলাকায় যত কাজ হয় তার সব ঠিকাদার তার নিজের। এলাকার দরিদ্রদেরকে রাতের অন্ধকারে টাকা দিয়ে ভোট কিনে জিতে যায়। জনগণ কাউন্সিলরের কাছে আসবে না। কাউন্সিলরকে জনগনের পাশে যেতে হবে। কেসিসির সেবা জনগণের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে হবে। আমাদের কাউন্সিলর জন বিছিন্ন। তাকে মানুষ প্রয়োজনে পাশে পায় না।
বিএনপি নেতা রুবায়েত হোসেন বাবু জানান, ওয়ার্ড বাসীর সাথে কাউন্সিলরের দুরত্ব অনেক বেশি। তবে কালো টাকার প্রভাবে প্রতিবার সে পার পেয়ে যায়। সে গতবার অনেক ওয়াদা করেছিল। সেই ওয়াদার মাত্র ৩০ শতাংশের মতো সে পুরন করেছে। দরিদ্রদের জন্য নির্ধারিত সকল ভাতা তার পোষ্যদের দখলে। এসব ক্ষেত্রে জনগণ নিরুপায়। এ ওয়ার্ডের মানুষ অনেকটা অসহায়। ভাঙ্গাচোরা রাস্তা-ঘাট, সড়কবাতি, ড্রেনেজ সমস্যা, মাদকের আধিপত্ত, ময়লা আবর্জনায় ভরে রয়েছে এ ওয়ার্ড। দল নির্বাচনে আসলে এবং আমাকে সমর্থন দিলে আমি একটি মডেল ওয়ার্ড তৈরি করবো।
যুবনেতা মোঃ বাচ্চু মোড়ল জানান, মাদকের ছড়াছড়ি, অনুন্নত ডেনেজ ব্যবস্থা, জলবদ্ধতা, সড়কবাতির স্বল্পতাসহ নানাবিধ সমস্যা এ ওয়ার্ডে। এলাকায় অন্যায়, অবিচারের ভরে গেছে। সরকারি টাকায় যেসব কাজ হচ্ছে, সেই কাজের মান অনেক খারাপ।
জাতীয় পার্টির মোঃ আসালাত মোড়ল জানান, সরকারে উন্নয়নের কিছু ছোঁয়া লেগেছে। তবে কাউন্সিলর কোন কাজ করেনি। মাদক, ড্রেনেজ সমস্যা, মশা, জলবদ্ধতা এবং পয়ঃনিস্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এ ওয়ার্ড। জনগনের সাথে কাউন্সিলরের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মানুষের সমস্যায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সে নিজে কোন দিন কোন বিচার-আচারও করতে পারে না। আত্মকেন্দ্রিক একজন মানুষ কাউন্সিলর।
এলাকাবাসি জানায়, আসন্ন নিবার্চনে আরো কয়েকজন প্রার্থী মাঠে নামতে পারে। এর মধ্যে ইকবাল গাজীর কথা বলছেন এলাকাবাসী।
সৌজন্যে দৈনিক খুলনা
(14)