তালা উপজেলার ছোটগাছা গ্রামের রামপদ বাছাড়ের পুত্র দেবাশীষ বাছাড় জানান, তালার গাছা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে ৮জন প্রার্থী আবেদন করেন। তন্মধ্যে গত ২ নভেম্বর তালা বিদে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় তিনিসহ ঐ পদের ৫জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এরপূর্বে বিগত মাসে উক্ত পদে সহ প্রধান শিক্ষক পদে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেবার চেষ্টাকালে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্ত ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষে সেই নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। দেবাশীষ বাছাড় জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া পরীক্ষার পূর্বে তিনি জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ অন্য দায়িত্বশীলরা আরেক পরীক্ষার্থী আশাশুনী উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের দিলীপ গাইনের কন্যা সুচন্দা গাইনকে নিয়োগ দিবে। সুচন্দার সহকারী গ্রন্থাগারিক সনদ জাল এবং তাঁর কাছ থেকে প্রায় ১৫লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তাকে নিয়োগ প্রদান করবে। এ খবর জেনে দেবাশীষ গত ১১ অক্টোবর- ১৫ ইং তারিখে তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ডিজি প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে সুচন্দার সার্টিফিকেট যাচাই বাছাইয়ের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু নিয়োগ কর্তৃপক্ষ জাল সনদ যাচাই-বাছাই না করে গত ২ নভেম্বর নিয়োগ বোর্ড আহবান করে। নিয়োগ বোর্ডর দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ ঘুষ নিয়ে মেধাহীন ও জাল সনদধারী সুচন্দাকে ৩৫ নম্বর দিয়ে প্রথম স্থান দেয়। পক্ষান্তরে মেধাবী প্রার্থী দেবাশীষকে দেয়া হয় মাত্র ২৬ নম্বর। এসময় এলাকার লোকজন ও নিয়োগ প্রার্থীরা সুচন্দার জাল সনদের প্রমান দাখিল করেন। এতে করে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ সম্পন্ন করেন এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ কার্য্যক্রম সাময়িক স্থগীত করেন। এছাড়া সুচন্দা গাইনের জমা দেয়া- রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা এর ডিপ্লোমা-ইন-লাইব্রেরী এন্ড ইনফরমেশন সাইন্স পরীক্ষা পাশের মূল সনদ (আইডি নং : ০১৪০২২৪৯৫১৮/২০১৫ সি.জি.পি. এ ৩.৫০) যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দেবার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন তদন্ত ছাড়াই গত ৭ নভেম্বর গোপনে সুচন্দা গাইনকে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ সম্পন্ন করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুশান্ত মন্ডল, তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুর ইসলাম, তালা বিদে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করছে। এ ঘটনায় এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরাসহ নিয়োগ প্রার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ ব্যাপারে গাছা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুশান্ত মন্ডলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে ঢাকা রয়েল ইউনিভার্সিটির সাথে যোগাযোগ করা হলে ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ জানান, সুচন্দা গাইনের উক্ত সার্টিফিকেটটি তার প্রতিষ্ঠানের নয় এবং ঐ সার্টিফিকেটের সিরিয়াল নম্বরও সঠিক নয়। এমনকি তাদের প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক’র কোনও প্রোগ্রাম নাই। এলাকাবাসীসহ নিয়োগ প্রার্থীরা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
-বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা, সাতক্ষীরা
(11)