পাইকগাছা( খুলনা ) প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র ও দুই হাজার সিপিপি সদস্য। কাজ করছে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি সহ সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বৃন্দ। খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম, মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে রোববার থেকে এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার সকাল থেকে বাতাসের সাথে সাথে বৃষ্টি ও বাড়তে থাকে। দুপুরে পর থেকে প্রচন্ড ঝড় সহ বৃষ্টি শুরু হয়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়। অন্যান্য দিনের তুলনায় মানুষের চলাচল খুবই কম ছিল। ঘূর্ণিঝড় কে ঘিরে বিকাল থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠা বাড়তে থাকে। বোয়ালিয়া স্লুইচ গেট সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ওয়াপদার বেড়িবাধে ফাঁটল দেখা দেয়। সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের চরম ভোগান্তি হয়। বাতাসের ধাক্কায় বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা ভেঙ্গে এবং উপড়ে যায় বলে খবর পাওয়া যায়।
দুপুরের বিশেষ প্রস্তুতি সভা করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। ইউ এন ও মমতাজ বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু।
উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি এম আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ আহমেদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস, শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা, সমাজসেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসান, উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান খান, উপজেলা রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন রানা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপ সহকারী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ, সিপিপি’র উপজেলা টিম লিডার আব্দুল্লাহ আল মামুন। সভায় ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন চিহ্নিত করা সহ দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণী এবং সকলের সহযোগিতায় অতিতের ন্যায় এবার ও আমরা সবাই মিলে দুর্যোগ মোকাবেলা করবো ইনশাআল্লাহ। তবে দুর্যোগ আমাদের উপর আঘাত যেন না আনে এটাই মহান আল্লাহর কাছে চাওয়া। আমরা সন্ধ্যার আগে সাধারণ মানুষ কে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য সবধরনের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের বড় শক্তি সিপিপি’র বড় একটি টিম কাজ করছে। আমরা বাঁধগুলোর উপর নজর রেখেছি। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি। আশা করি সকলের সহযোগিতায় আমরা সবাই মিলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলা করবো। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ এলাকার কোথাও কোন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
(0)