আসাফুর রহমান কাজল
আসন্ন কেসিসি নির্বাচনকে ঘিরে ৫ নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশ সরব। এলাকাবাসী এখন থেকেই গত বছরগুলোর চাওয়া-পাওয়ার হিসেব মেলাচ্ছে। তারা জানায়, যিনি কথার সাথে কাজের মিল রাখবেন, গরীবের প্রতি সদয় হবেন, সকলকে মূল্যায়ন করবেন, এমন মানুষকে তারা কাউন্সিলর বানাতে চায়।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ডটি ভৈরব নদ, দেয়াড়া বাউন্ডারী রোড, সাতক্ষীরা রোড এবং দৌলতপুর কলেজ রোড এলাকাজুড়ে। এ ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। এবার ভোটার নারী-পুরুষ মিলে প্রায় ১২ হাজার।
বর্তমান কাউন্সিলর এবং স্কুল শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, দৌলতপুর বাজার রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান। রাস্তা-ঘাট, ড্রেণ উন্নয়ন করেছি। বাজার রক্ষা বাঁধ প্রকল্প অনুমোদ হয়েছে। জন্মনিবন্ধন, বিদ্যুৎ এবং সকল প্রকার ভাতাদি শতভাগ দিতে পেরেছি। দত্তপুকুরবাড়ির পুকুর পুন:খনন করা হবে। এলাকাবাসীর সাথে আমার সম্পর্ক অত্যান্ত মধুর। জনগণ আমাকে যে ভালবাসা দিয়েছে আমি তা ভুলতে পারবো ন। এখানে মাদক একটি বড় সমস্যা। আর মাদক নির্মূল প্ররোটাই প্রশাসনের উপর নির্ভর করে। তবে এলাকায় মাদক নির্মূলে আমি একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছি। করোনা, ইউক্রেণ-রাশিয়ার যুদ্ধ, সব সমস্যা কাটিয়ে যতটুকু সম্ভব আমি উন্নয়ন করেছি।
এই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসএম হুমায়ুর কবীর জানান, আমার বেশকিছু ভুল ছিল। যার জন্য গতবার পরাজিত হয়েছি। এ ওয়ার্ডে বর্তমানে যেসব কাজ হচ্ছে, তা আমার আমালে পাশ করা কাজ। আরো কিছু প্রকল্প আমার আমলে পাশ করা হয়েছিল। যা পর্যায় ক্রমে কাজ হবে। একটা সময় দত্তবাড়ির পুকুরটি দখল হয়ে যাচ্ছিল। আমি জীবনের রিক্স নিয়ে সেটি রক্ষা করি। আমি এলাকায় যথেষ্ঠ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছি। বর্তমানে এলাকার ড্রেণেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা নাইবা বললাম। এলাকার ময়-মুরুব্বিদের সাথে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করা যায়। কিন্তু সেটি হচ্ছে না। যথাযত মূল্যায়ন না করায় এলাকার মুরুব্বি এবং যুবদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মাচ্ছে। আমি যখন কাউন্সিলর ছিলাম তখন বেশ কিছু ভুল করেছি। তার সাঁজা আমি পেয়েছি এবং পাচ্ছি। আমি এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। আগামীতে সেই ভুল শুধরে এলাকার ময়-মুরুব্বি, তরুন এবং যুবদেরকে সাথে নিয়ে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একটি আদর্শ ওয়ার্ড হিসেবে এই ওয়ার্ডকে গড়ে তুলতে চাই।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ খোকন জানান, আমাদের ৫ নং ওয়ার্ডে সরকারের চলমান উন্নয়নের কাজ হয়েছে। এ জন্য কেউ যদি বলে আমি করেছি। তাহলে সেটি ভুল হবে। এ এলাকায় ড্রেনেজ, রাস্তাঘাট, পয়ঃনিস্কাশন, বর্জ্যব্যবস্থাপনা উন্নয়ন করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হলো না। এবার দল যদি আমাকে সমর্থন দেয় তাহলে আমি নির্বাচনে যেতে চাই এবং জয়ী হলে পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড হিসেবে এ ওয়ার্ডকে গড়ে তুলবো।
ওয়ার্ড বিএনপি’র আহবায়ক শেখ ইমাম হোসেন জানান, নগরীতে কেসিসি যথেষ্ঠ উন্নয়ন করেছে কিন্তু সেই হিসেবে ৫ নং ওয়ার্ড পিঁছিয়ে। ওয়ার্ডে মাদক সেবন এবং বিক্রি চলছে হরদম। কয়েকটা পাড়া রয়েছে, মাদকের কারনে সেইসব পাড়ার মেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত হচ্ছে না। আমাদের দৌলতপুর বাজার আজ তার জৌলশ হারাতে বসেছে। এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নদীর পাড়বর্তী বাজার রক্ষায় কাজ করতে হবে। সব থেকে বড় কথা আমাকে মনে রাখতে হবে, আমি কি বলছি আর কি করছি। মুখে কথার ফুলঝুরি আর কাজের নামে নাই। এমন নেতা ওয়ার্ডবাসী চায় না। আমি ছোটকাল থেকে এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। আছি এবং থাকবো। আর দল যদি আমাকে প্রার্থী করে তাহলে আমি ওয়ার্ডবাসীকে ভলান্টারী সেবা দিতে চাই।
বিএনপি নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন জানান, আমি ৮৬ সাল থেকে ছাত্ররাজনীতি করে আসছি। আজ পর্যন্ত হামলা, মামলায় টিকে থেকে এলাকাবাসীর পাশে আছি। আমি মনে করি বর্তমান কাউন্সিলর তার নির্বাচনী ওয়াদার মাত্র ৩০ শতাংশ পুরন করেছে। তাও কেসিসি’র মেয়র সাহেবের চলমান কাজের ধারাবাহিকতায় হয়েছে। আমি তালকে তাল আর কালোকে কালো বলতে চাই। আমি গত নির্বাচনে অনেক ভোট পেয়েছি। এলাকাবাসী আমাকে ভালবাসে বলেই আমি এতো বেশি ভোট পেয়েছিলাম। আশা করছি দল এবার আমাকে সমর্থন দিবে এবং জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবো।
বিএনপি নেতা মোঃ খবির উদ্দিন জানান, বহু সমস্যা রয়েছে এ ওয়ার্ডে। আমি মনে করি, এ ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। দল আমাকে সমর্থন দিলে আমি নির্বাচন করতে প্রস্তুত।
ঋষিপাড়া (দাসপাড়া) এলাকার সোহেল জানান, ক্ষমতায় আসলে মানুষের কথা এবং কাজের মিল থাকে না। তার প্রমান আমরা পাচ্ছি।
জানাযায়, ৫ নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মহিলা আওয়ামী লীগের ফারহানা পারভিন নিপু, সতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে শেখ কামরুজ্জামান নির্বাচনে আসতে পারেন।
সৌজন্যে দৈনিক খুলনা
(29)