নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই খুলনার অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যকেন্দ্র চুকনগর বাজারে সরকারী পেরিফেরি (বাজার এলাকার সীমানার জমি) জায়গার উপর নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা বহুতল ভবন। একের পর এক বেআইনীভাবে পাকা ভবন নির্মিত হলেও ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
খুলনা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দুরে সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার সংযোগ স্থানে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাজারটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। বাজারে প্রায় দেড় হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারী ব্যাংক রয়েছে দুটি এবং বেসরকারী ব্যাংক রয়েছে আরও দুইটি। বাজারটিতে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল, থ্রি হুইলার, পিকআপসহ অন্যান্য যানবাহন বিক্রিরও শো রুম রয়েছে। তাছাড়া গরু হাটসহ সাপ্তাহিক হাট এবং দৈনন্দিন বাজারও বসেে থাকে। সঙ্গত: কারণে বাজারের গুরুত্ব অনেক বেশি।
বাজারে প্রায় প্রতিনিয়ত বহুতল পাকা ভবন গড়ে উঠছে। বাজার এলাকায় অনেক সরকারী জমি রয়েছে। এ সকল জমির মধ্যে পেরিফেরি জমিতে পাকা ভবন তৈরী করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একের পর এক পাকাভবন গড়ে ঊঠছে। ইতোমধ্যে অর্ধশত পাকাভবন নির্মিত হয়েছে। তাছাড়া জমি বরাদ্দ দেয়ার নিয়মের কোন ধার ধারছেন না ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। তারা সরদার আব্দুল কাউয়ুমের স্ত্রীসহ একই পরিবারের ২৪ জনের নামে ১২ শতক জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। সরদার আব্দুল কাইয়ূম বিএনপি থেকে সম্প্রতি আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন। তার শ্যালক আলী রেজার নামেও জমি বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। আলী রেজা কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং কেশবপুর উপজেলার গৌরিঘোনা ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান।
চুকনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: মাহবুব আলম বলেন, বাজারের প্রায় দেড়হাজার ব্যবসায়ী রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী ভাড়া ঘর, কেউ কেনা জমি, কেউ পৈত্বিক সূত্রে পাওয়া জমিতে ঘর নির্মান করে ব্যবসা করছেন। তাছাড়া বাজার এলাকায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরকারী জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য পাকা ভবন তৈরী করেছে। তবে পেরিফেরি জমিতে তৈরীকৃত ভবনের পাকা ছাদ দেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আব্দুল কাইয়ূম সরদার বলেন, জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে আমরা ২৪ জনে ১২শতক জমি বরাদ্দ নিয়েছি। সেখানে একটি পাকাভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। অনেকেই ভবনের ছাদ দিয়েছেন তাই আমিও ভবনের ছাদ দিয়েছি। এতোদিন ধরে অনেকেই ভবনের উপর পাকা ছাদ দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অথচ আমরা যখন ভবনের ছাদ দিচ্ছি তখন আইনের কথা বলা হচ্ছে। তিনি আমার রাজনৈদিক প্রতিপক্ষরাই এমন করতে পারে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বয়ারসিং কাজী রেজাউল করীমের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য দিতে রাজি হননি। এমনকি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ায় তিনি অশ্লীল ভাষায় সাংবাদিকদের গালাগাল করেন। তিনি বলেন, পত্রিকায় লিখলে কি হয় ?
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা বলেন, সরকারের বিধি অনুযায়ী বাজারের পেরিফেরির বরাদ্দ নেয়া জমিতে নির্মিত কোন ভবনের পাকা ছাদ দেয়া যাবে না। চুকনগর বাজাওে বেশ কিছু ব্যক্তি এই জমিতে পাকাভবন নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-আব্দুল লতিফ মোড়ল, ডুমুরিয়া, খুলনা
(6)