সরেজমিনে যেয়ে ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বি-বার্ষিক ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক, শিক্ষক প্রতিনিধি ও দাতা সদস্য নির্বাচন ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিভিন্ন শ্রেনীর মোট ৯জন প্রতিনিধি সদস্য নির্বাচিত হন। বিধি অনুযায়ী নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে গত ২২ অক্টোবর কমিটির প্রথম সভায় সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ ফিরোজ আহমেদ এ নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বপালন করেন। তিনি সভাপতি নির্বাচনের লক্ষে সদস্যদেরকে তাদের মনোনিত প্রার্থীর নাম প্রস্তাব আহবান করেন। এসময়ে কমিটির সদস্য আফরোজা বেগম, গৌর কিশোর রায় ও মোঃ কালাম মোড়ল সভাপতি হিসাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দের নাম প্রস্তাব ও সমার্থন করেন। এসময়ে প্রিজাইডিং অফিসার প্রস্তাবিত ব্যাক্তির সম্মতিপত্র আছে কিনা জানতে চান। কিন্তু তারা সম্মতিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। অপরদিকে সদস্য মোঃ আছাবুর রহমান মোল্যা, কারিমুল ইসলাম সরদার ও মোহাব্বত হোসেন মোল্যা সভাপতি হিসাবে স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোল্যা মাহমুদুল হাসানের নাম প্রস্তাব ও সমার্থন করেন। তাদের এই প্রস্তাবে ৩জন শিক্ষক প্রতিনিধি সমার্থন জানান এবং তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা-কর্মী নির্বাচনে প্রতিমন্ত্রীর ‘পরাজয়’ হিসাবে আখ্যায়িত করে ফলাওভাবে প্রচারের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করিয়ে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করে প্রতিমন্ত্রীর ভাবমুর্তি নষ্টের পায়তারা চালাচ্ছেন। আর এ কর্মকান্ডের নেপথ্যে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা শেখ আব্দুল কুদ্দুসের বিশেষ ভুমিকা রয়েছে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে। ওই নির্বাচনে শেখ আব্দুল কুদ্দুস সমার্থিত নির্বাচিত সদস্যরা বিধিবহির্ভূতভাবে প্রতিমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করেন।
এ প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য আবুল কালাম মোড়ল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সদস্য গৌর কিশোর সরদার প্রতিমন্ত্রীর মহোদয়ের নাম প্রস্তাব করলে আমরা সমর্থন করি। প্রতিমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে আপনারা তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি।’
নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘সভাপতি নির্বাচনী সভায় সদস্যদের কাছে আমি প্রার্থীর নাম প্রস্তাবের আহবান জানালে একজন প্রার্থী প্রতিমন্ত্রীর মহোদয়ের নাম প্রস্তাব করলেই আরো দু’জন সদস্য সমর্থন করেন। এসময়ে আমি ওই সদস্যদের কাছে প্রতিমন্ত্রীর মহোদয়ের সম্মতিপত্র আছে কিনা জানতে চাই। তখন তারা সম্মতিপত্র দেখাতে না পারায় আমি প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে তার সম্মতি জানতে চাইলে তিনি প্রস্তাবটি নাকোচ করে দেন। এসময়ে আমি ওই সদস্যদের প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহবান জানালে তারা সভাকক্ষ ত্যাগ করে চলে যান। যে কারণে ওই প্রস্তাব গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ৬জন সদস্যের প্রস্তাব ও সমার্থনের ভিত্তিতে স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোল্যা মাহামুদুল হাসানকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।’
এ বিষয়ে নির্বাচিত কয়েকজন অভিভাবক সদস্যের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সভাপতি নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তারা প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলেন। তিনি (প্রতিমন্ত্রী) সভাপতি হিসাবে স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও আ’লীগ নেতা মোল্যা মাহমুদুল হাসানকে সভাপতি নির্বাচিত করার জন্য সদস্যদের অনুরোধ জানিয়ে গত ১৮ অক্টোবর (১৪দিনের জন্য) রাষ্ট্রীয় সফর ও চিকিৎসার জন্য ভারতে গমন করেন। বর্তমান তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। অথচ একটি কুচক্রিমহল প্রতিমন্ত্রীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের অপচেষ্টায় তাকে স্কুল নির্বাচনে ‘পরাজিত’ আখ্যায়িত করে তা ফলাওভাবে প্রচার প্রচারনায় উঠে পড়ে লেগেছেন। এনিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার লক্ষ্য করা গেছে।
এ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান (সাবেক) শেখ আব্দুল কুদ্দুস মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সমার্থিত সদস্যরা আমার সাথে পরামর্শ ছাড়াই প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নাম প্রস্তাব-সমর্থন করে। যার কারণে প্রতিমন্ত্রী’র ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে বলে আমিও মনে করি। বিষয়টি নিয়ে আমি ওদের বকাবকি করেছি এবং প্রতিবাদ দেয়ার জন্য বলেছি।
-আব্দুল লতিফ মোড়ল, ডুমুরিয়া, খুলনা
(24)