জমিদখলকালে জমির উপর স্থাপিত ঘরোয়া পূজা মন্ডপ উচ্ছেদ সহ লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খেশরা গ্রামের মৃত. সুধির দাশের পুত্র বিধান দাশ এই অভিযোগ করেছেন।
বিধান দাশ জানান, খেশরা মৌজার ৪৬৩ নং খতিয়ানের সিএস ৪৪৬, ৪৪৭ ও ৪৫১ দাগের ৯১ শতক জমি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। কিন্তু ১৯৬২ সালের রেকর্ডে ভূলক্রমে উক্ত জমি খাস সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড হয়। উক্ত রেকর্ডের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ তালা সহকারী জর্জ আদালত সাতক্ষীরাতে মামলা (১৮/১৪) চলমান রয়েছে।
বিধান দাশ বলেন, উক্ত ৯১ শতক জমি খাস খতিয়ান ভুক্ত হবার পর একই গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দীন ও কলিম উদ্দীন এবং পরবর্তীতে তাদের পুত্র আব্দুর রহমান, মেহের, জামাল, আবুল, মোকবুল ও জোহর গং কৌশলে দখলে নেয়।
এনিয়ে স্থানীয় ভাবে, থানা পুলিশ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর কার্যলয়ে শালিস সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রেক্ষাপটে বিগত ২ বছর পূর্বে আব্দুর রহমান গং উক্ত জমি ছেড়ে দেয়। পরবর্তিতে বিধান দাশ সেখানে ধানচাষ ও মৎস্য ঘের শুরু করে। এছাড়া জমির একাংশে ঘরোয়া পূজা মন্ডপ নির্মান করে সেখানে পূজা-অর্চনা করা হয়। কিন্তু বিগত বছর আব্দুর রহমান গং পুনরায় ওই জমি দখল নিতে আসে।
এতে বাঁধা দেওয়ায় আব্দুর রহমান গং সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সংখ্যালঘু ও সমাজের পিছিয়ে পড়া দলিত শ্রেণির মানুষ বিধান দাশের উপর হামলা করে। হামলায় বিধান দাশসহ তাঁর স্ত্রী ও কন্যা গুরুতর আহত হয়ে তালা হাসপাতালে ভর্তি হয়। এসব ঘটনায় সেসময় তালা থানায় মামলা দায়ের হয়। এছাড়া জমির জোর দখল সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়, যা’ এখন বিচারাধিন রয়েছে।
মামলা চলাকালীন সময়ে আব্দুর রহমান গং বারবার উক্ত জমি দখল নেবার চেষ্টা করলে তালা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। উক্ত অভিযোগ নিস্পত্তির লক্ষ্যে একাধিকবার শালিস অনুষ্ঠিত হয়। আগামী শনিবার পুনরায় শালিস সভার মাধ্যমে উক্ত অভিযোগ নিস্পত্তি করার জন্য তালা থানার ওসি মো. সগির মিয়া খেশরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস. এম. লিয়াকত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এম. ফজলুল হককে দায়িত্ব দিয়েছেন।
কিন্তু এরইমাঝে রোববার ভোরে ধারালো, দাঁ, বাঁশের লাঠি ও লোহার রড সহ শতাধিক লোক নিয়ে আব্দুর রহমান গং উক্ত জমি জোর দখল নেয়। জমিতে সন্ত্রাসীরা ধানের চারা রোপন করে এবং ঘের থেকে মাছ লুটপাট করে। এছাড়া জমির এক অংশে তৈরি ঘরোয়া পূজা মন্ডপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। পূজা মন্ডপের বেড়া ও চালাসহ সব কিছু লুট করে নিয়ে যায় এবং পূজা মন্ডপের স্থানকে ফাঁকা স্থানে পরিনত করে।
এঘটনার পর থেকে আব্দুর রহমান গং বিধান দাশ এবং তাঁর পরিবারকে হুমকি প্রদান করছে বলেও ভুক্তভোগী বিধান দাশ অভিযোগ করেছেন। যে কারনে তার পরিবারের সদস্যরা বাহিরে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে পারছেনা।
এছাড়া শাহাজাতপুর বাজারে জুতা সেলাই ও পালিশের কাজে যেতেও বিধান দাশ ভয় পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন। তবে জানতে চাইলে, এসব ঘটনা অস্বীকার করে মেহের আলী গাজী বলেন, উক্ত জমি তাদের ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত এবং বর্তমানে তাদের নামে রেকর্ড রয়েছে।
রোববার সকালে উক্ত জমিতে ধান চাষের কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন ঘরোয়া পূজা মন্ডপ ভাংচুর বা মন্ডপের কোনও কিছু লুটপাট করা হয়নি।
বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা, সাতক্ষীরা
(43)