উপজেলার জেঠুয়া বাজারের পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের নামে প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার প্রতারক শেখ আলতাফ হোসেন স্কুল প্রতিষ্ঠার নামে সরকারি টাকা আতœসাৎ ও বারবার একই পদে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
উপজেলার ধুলন্ডা গ্রামের শেখ নিজাম উদ্দীনের পুত্র ভুক্তভোগী শেখ আবুল কালাম, জেঠুয়া গ্রামের শেখ আসাদুজ্জামান সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বিগত ২০০১ সালে আলতাফ হোসেন জেঠুয়া বাজারের পাশে নিজ জমিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
সেসময় তিনি বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক হিসেবে আবুল কালাম এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিজ স্ত্রী হানিয়া খাতুন সহ ফতেমা বেগম এবং শিউলী রানীকে নিয়োগ দেন।
নিয়োগ পাবার পর প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম ও সহকারী শিক্ষক ফতেমা এবং শিউলী রানী বিদ্যালয়টির ভবন নির্মান সহ আনুষাঙ্গীক প্রয়োজনে প্রত্যেকে লক্ষাধিক টাকা ব্যায় করেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু এরইমধ্যে সুচতুর আলতাফ হোসেন ২০০৭ সালে আকষ্মিক ভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। পরে আলতাফ হোসেন বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে নেওয়া সহ বিদ্যালয় মাঠে ফসল চাষাবাদ শুরু করেন।
একারনে শিক্ষকরা জীবিকার তাগিদে অন্যত্র কাজ শুরু করেন। এসুযোগে আলতাফ হোসেন আবারও বিদ্যালয় শুরুর নাম করে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করাতে পারেননি। অভিযোগকারীরা আরও জানান, উক্ত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় ব্যাংকে একটি যৌথ হিসাব খোলা হয়।
কিন্তু ২০০৭ সালে বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দেবার পর প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে আলতাফ হোসেন ব্যাংক থেকে সমূদয় টাকা উঠিয়ে নিয়ে আত্মসাত করে। বর্তমান সরকার সারাদেশে সকল রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করে। এই লোভে বিএনপি নেতা প্রতারক আলতাফ হোসেন পূর্বে নিয়োগ দেয়া সকল শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন করে তাঁর নিজ স্ত্রী, ভায়ের পুত্রবধু এবং পাইকগাছা ও অন্য এলাকা থেকে ২ প্রার্থী যোগাড় করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তাদের নিয়োগ দেবার চেষ্টা করছে।
অভিযোগকারীরা আরও জানান, তালা উপজেলায় সকল রেজিষ্টার্ড বিদ্যালয় সরকারি হবার পর বাদপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বিধি মোতাবেক দুই দফায় সরকারি করনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে রেজ্যুলেশন করে পাঠিয়েছে। উক্ত রেজ্যুলেশনে জেঠুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এর নাম নেই।
তারপরও উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে আলতাফ হোসেন অবৈধভাবে বিদ্যালয়টি আবার চালু এবং সরকারি করনের চেষ্টা করছে।
এই কারনে আলতাফ হোসেন ইতোমধ্যে সবজি ক্ষেতের মধ্যে নতুন করে ভবন নির্মান প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রকৃত শিক্ষকদের বাদ দিয়ে ঘুষ নিয়ে নতুন প্রার্থীদের নিয়োগ দেবার পায়তারা শুরু করেছে।
এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা তালা উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন দপ্তরে আবেদন করলেও তাঁর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এব্যপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ হোসেন বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে প্রশাসন ও মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বর্তমানে বিদ্যালয়টি পূন:প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
নতুন করে যে দুজন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারাই সকল ঘুষের লেনদেন করে বিদ্যালয়টি অনুমোদের চেষ্টা করছে বলেও আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন।
এছাড়া অভিযোগকারী শিক্ষকদের দেয়া টাকার ফেরত দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
-বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা, সাতক্ষীরা
(27)