পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: পাইকগাছায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণ নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রাথমিক তদন্ত করে অনিয়মের কোন অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন সারাদেশে মুসলমানদের ২য় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষে প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্র মানুষের জন্য ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ হাজার ৮৩১ জন উপকারভোগীর অনুকূলে ১০ কেজি করে ১৮.৩১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হয়। বরাদ্দকৃত চাল শেষ কর্মদিবস অর্থাৎ ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়া হয় এবং ১১ টার দিকে বিতরণ শুরু করা হয়।
বিতরণের ২ দিন আগে তালিকাভুক্ত উপকারভোগীদের বাড়িতে বাড়িতে টোকেন পৌছে দেওয়া হয়। ট্যাগ অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মীর নূরে আলম সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চাল বিতরণ করা হয়। বিতরণের শেষের দিকে ১০৩ জন মত কার্ডধারী উপকারভোগী অনুপস্থিত থাকায় বেশ কিছু চাল উদ্বৃত্ত থেকে যায়। কার্ডধারী উপকারভোগী উপস্থিত না থাকায় এবং পরের দিন ছুটির দিন থাকায় উদ্বৃত্ত চাল নিয়ে বিপাকে পড়েন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ। পরে ট্যাগ অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্মিত ইউনিয়নের ২টি আবাসনের বাসিন্দা ও উপস্থিত দরিদ্রদের মাঝে অতিরিক্ত চাল বিতরণ করা হয়। পরের দিন কয়েকজন ব্যক্তি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে চাল পাইনি বলে দাবী করলে বিষয়টি নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার শুরু করে। এ ব্যাপারে ট্যাগ অফিসার মীর নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি উপস্থিত থেকে চাল বিতরণ করেছি। শেষে কিছু চাল থেকে যাওয়ায় ইউএনও স্যারের নির্দেশে সেগুলো আবাসনের বাসিন্দা ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করি। চাল বিতরণে কোন ধরণের অনিয়ম হয়নি বলে তিনি জানান।
ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান শেখ খোরশেদুজ্জামান জানান, ট্যাগ অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদবর্গের উপস্থিতিতেই চাল বিতরণ করা হয়। ১০৩ জন কার্ডধারী চাল নিতে আসেনি। পরের দিন ছুটি থাকায় এবং পরিষদের সুরক্ষিত কোন গুদাম ঘর না থাকায় ওই দিনই ইউএনও মহোদয়কে জানিয়ে ইউনিয়নের হিতামপুর ও বাইসারাবাদ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ও উপস্থিত দরিদ্রদের মাঝে উদ্বৃত্ত চালগুলো বিতরণ করি। যে দিন চাল বিতরণ করা হয় সেদিন কোন মানুষ চাল না নিয়ে ফিরে যায়নি।
চাল পায়নি এমন কেউ বলতে পারবে না। পরের দিন কিছু মানুষ চাল পাইনি বলে দাবী করায় একটি মহল এটিকে পুঁজি করে ইউনিয়ন পরিষদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে অপপ্রচার করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, চাল বিতরণ শেষে কিছু চাল উদ্বৃত্ত থেকে গেলে বিষয়টি আমাকে অবহিত করা হয়। পরের দিন ছুটি থাকায় এবং পরিষদে চাল মজুদ রাখা নিরাপদ নয় ভেবে উদ্বৃত্ত চালগুলো প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝে বিতরণ করার নির্দেশ দেই। পরবর্তীতে চাল বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচার হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্ত করে দেখা হয়। কিন্তু তদন্তে কোন অনিয়মের অভিযোগ মেলেনি।
তবে বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হতে এ সম্পর্কিত কর্মকর্তাদের দিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
(9)