পাইকগাছায় কলেজ ছাত্রী শারমিন আক্তার উর্মি আত্মহত্যার ঘটনায় সহপাঠীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। উর্মির মা নাজমা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। উল্লেখ্য, উপজেলার হাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের রেজাউল করিম সরদারের মেয়ে ও লক্ষ্মীখোলা কলেজিয়েট স্কুলের এইচএসসি শিক্ষার্থী উর্মি (২০) সহপাঠীদের অপমান সইতে না পেরে গত ৯ সেপ্টেম্বর নিজ বসতবাড়ীতে বিষপানে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার একদিন পর উর্মির নিজ হাতে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। দু’পাতার প্যাডে উর্মি তার মায়ের উদ্দেশ্যে “আম্মু! তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও, তুমি ভাবতে পারো যে, আমি মনে হয় কোন ছেলের জন্য মরে যাচ্ছি। কিন্তু না! আমি কোন ছেলের জন্য এটা করছি না। আমি সত্যেই মরতে চাইনি, কিন্তু কি করব বলো, কেউ কি তার চরিত্র সম্পর্কে বাজে কথা শুনতে চাই। আম্মু তুমি জানো না, সেদিন কলেজে সবার সামনে লাকী, হেনা, রনি, সামছুন্নাহার এরা সবাই আমাকে বলেছে যে আমি নাকী চরিত্রহীন। মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না। আম্মু আমি সত্যিই কোন ছেলের সাথে বাজে কাজ করেনি। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে তোমাদের ছেড়ে চলে যেতে। কিন্তু কি করব! আমি এই সব কথা আর শুনতে পারছি না। অনেক সহ্য করছি, আর পারছি না। আমি সত্যিই কোন বাজে কাজ করেনি। কিন্তু এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাই না। আমাকে সবাই খারাপ ভেবে আমার সাথে কেউ কথা বলতে চাই না। আম্মু তুমি আমাকে মাফ করে দিও। আমিও কোনদিন ভাবেনি যে আমাকে এভাবে মরতে হবে। অনেক আশা নিয়ে পাইকগাছায় পড়তে এসেছিলাম। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না। আমি তোমার আশা পূরণ করতে পারলাম না। আম্মু তুমি ভালো থেকো। আমার জন্য বেশি ভেবো না। আমার কপালে যেটা লেখা ছিল সেটা হচ্ছে।”-এসব কথাগুলো লিখে রেখে যায়। এ ঘটনায় উর্মির মা নাজমা খাতুন বাদী হয়ে উর্মির সহপাঠী হাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সরদারের মেয়ে লাকী (২০), কমলাপুর গ্রামের হারুন গাজীর মেয়ে হেনা খাতুন (২০), গজালিয়া গ্রামের রফিক সরদারের ছেলে রনি সরদার (২১), গণি গাজীর মেয়ে সামছুন্নাহার (২০) ও খলিল শেখের ছেলে রাব্বি শেখ (২১) কে আসামী করে গত ২৯ সেপ্টেম্বর পাইকগাছা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
-মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা, খুলনা
(2)