বর্তমানে এ তিন গ্রামের প্রায় দেড়’শতাধিক পরিবার বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরী জিনিসপত্র বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। গত ৩ দশক আগে বাঁশ ও বেতের তৈরী জিনিসপত্রের তেমন চাহিদা না থাকায় কোনো রকমেই জীবন-যাপন করতে হতো ঋষি পল্লীর লোকদের। জিনিসপত্র বিক্রির অর্থদিয়ে কোনো রকমে বেঁচে থাকাই যেখানে দায়ছিল, সেখানে ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার কথা কখনো ভাবতোনা পরিবারের প্রধানরা। ৮০’র দশকে উপকূলীয় এ অঞ্চলে চিংড়ী ও মাছ চাষ শুরু হওয়ার পরথেকে বাড়তে থাকে বাঁশের তৈরী জিনিসপত্রের। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ী চাষ হয়।
বছরে উৎপাদন হয় ১৫ হাজার মেঃটঃ চিংড়ী, মাছ ও কাঁকড়া। উৎপাদিত এ মাছ, কাঁকড়া সরবরাহের জন্য প্রয়োজন হয় বাঁশের তৈরী ঝুড়ি। এজন্য মাছ, কাঁকড়া উৎপাদন ও সরবরাহকারীদের চাহিদার সকল ঝুড়ি সরবরাহ করে থাকে ঋষি পল্লীর লোকেরা। গত কয়েক বছরে বাঁশের তৈরীর জিনিস পত্রের যেমন বেড়েছে চাহিদা তেমনি বেঁড়েছে কাঁচা মালের মূল্য। এরপরও বাড়তি চাহিদা থাকায় বাঁশ শিল্পের কাজ করে পূর্বের তুলনায় উন্নত হয়েছে ঋষি পল্লীর লোকদের জীবন-যাপনের মান।
প্রতিদিন ঘরে বসেই নারী ও পুরুষ সবাই সমান ভাবেই তৈরী করেন জিনিসপত্র। কেউ ফাড়ে বাঁশ, কেউ আবার সুন্দর করে সাইজ করে বাঁশের শলাকা। এক কথায় পরিবারের সবাই মিলে কাজ করে তৈরী করেন সুন্দর ও মজবুত জিনিসপত্র। তৈরীকৃত জিনিস বিক্রি করে পরিবারের ভরণ-পোশন যোগান দেয়ার পাশা-পাশি সু-শিক্ষাই শিক্ষিত করে তুলছেন ছেলে-মেয়েদের। পুরাইকাটী গ্রামের মৃত চিত্তরঞ্জন দাশের ছেলে পবিত্র কুমার দাশ জানান, গত কয়েক বছরে বাঁশের তৈরী জিনিস পত্রের চাহিদা কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় এসব জিনিস শুধুমাত্র গৃহস্থলির কাজেই ব্যবহত হতো।
-এখন চিংড়ী, কাঁকড়া ও মাছ সরবরাহের কাজে বাঁশের ঝুড়ির প্রয়োজন হয়, আর প্রয়োজনীয় ঝুড়ি গুলো আমাদেরকে সরবরাহ করতে হয়। ফলে জিনিসের চাহিদা বাড়ার কারণে জীবন-মান ও উন্নত হয়েছে। দুটি ছেলে মেয়েই বর্তমানে লেখা পড়া করছে। এভাবেই প্রায় প্রতিটি পরিবারের ছেলে মেয়েরা সু-শিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে উঠছে। তবে পুঁজির অভাবে কাঁচা মাল সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকটাই বেগ পেতে হয়, বিলুপ্তপ্রায় এ শিল্পের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এক্ষেত্রে সরকারী সহায়তার প্রয়োজন বলে মনে করছেন ঋষি পল্লীর পরিবার গুলো।
-মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা, খুলনা
(16)