প্রতিদিন ভোর থেকে টানা ৮-১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকে এলাকা। বিদ্যুৎতের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও মাসের পর মাস বিদ্যুতের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকবাসী। টানা কয়েক মাসের এমন পরিস্থিতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে দৈনন্দিন কার্যক্রম।
বিদ্যুতের মেইন লাইন (৩৩ কেভি)’র রক্ষনাবেক্ষণ কাজের জন্য এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের দাবী বৃহত্তর সার্থে দিনের কিছুটা সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। চলমান কাজ শেষ হলে বিদ্যুতের যে সরবরাহ রয়েছে তাতে ভবিষ্যতে আর বিদ্যুৎ না থাকার সম্ভবনা থাকবে না। এমনকি ছোট খাটো প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময়ও বিদ্যুৎ বিছিন্ন হবেনা।
আর এজন্য চলমান কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামন্য এ ভোগান্তি টুকু সবাইকে মেনে নিতে হবে। উল্লেখ্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাইকগাছা জোনাল অফিসের আওতায় বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গত এক বছরে ৫ হাজারেরও অধিক গ্রাহক বেড়েছে। জোনাল অফিসের আওতায় দু’উপজেলায় বিদ্যুতের বর্তমান চাহিদা প্রায় ১১ মেগাওয়াট।
যা গতবছর ছিল ৬ মেগাওয়াটএর মত। এভাবেই প্রতি নিয়ত গ্রাহকের সংখ্যা বাড়লেও বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে পুরাতন লাইনের উপর। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে যুগ যুগ ধরে ৩৩ কেভি’র ফোর নট তাঁর দিয়ে চালু রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
ফলে এদিকে প্রতিনিয়ত গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাপ পড়েছে লোডের উপর। অপরদিকে জরাজির্ন হয়ে পড়েছে পুরানো আমলের ৩৩ কেভি’র তাঁর। ফলে সামান্য বাতাস হলেই বিছিন্ন হয়ে পড়ে সংযোগ ব্যবস্থা। এদিকে গত বছর থেকে ৩৩ কেভির পুরানো লাইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আঠারো মাইল থেকে কপিলমুনির সলুয়া পর্যন্ত ৩৩ কেভির ফোর নট তার পরিবর্তন করে লাগানো হচ্ছে ফোর সেভেন সেভেন উন্নত তার। অপরদিকে খুলনার মুজগুন্নি গ্রীট থেকে কপিলমুনি পর্যন্ত ডাবল সার্কিট স্থাপন করার মাধ্যমে বসানো হচ্ছে নতুন খুঁটি। গতবছর ফেব্র“য়ারী, মার্চ থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত চলমান রয়েছে রক্ষনাবেক্ষনের এ কাজ।
আর এ কাজ করতে গিয়েই প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে বেলা ২-৩ টা পর্যন্ত টানা ৮-১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে কর্তৃপক্ষ। ফলে দিনের বেশীরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে স্থবীর হয়ে পড়েছে প্রতিদিনের দৈনন্দিন কার্যক্রম। পৌর সদরের মুন্না অফসেট প্রেসের বায়েজিত জানান, দিনে র অর্ধেকেরও বেশী সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সময়মত ডেলিভারী দিতে না পারায় প্রতিদিন কাষ্টমারদের কথা শুনতে হয়। ইমন কম্পিউটারের স্বত্তাধীকারী হারুন-অর রশিদ (ইমন) জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় বেলা ৩টা পর্যন্ত রোজগারের পরিমাণ থাকে শুন্য। গত কয়েক মাসে আয় কমে যাওয়ায় বর্তমানে বড় ধরণের আর্থিক সংকটে পড়েছেন বলে তরুণ এ ব্যবসায়ী জানান।
এব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ জানান, রক্ষনাবেক্ষনের কাজের জন্য দিনের বেলায় কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের সুবিধার্থে সাতক্ষীরা থেকে আসা কয়রা লাইনের সাথে সংযোগ দিয়ে কিছুটা হলেও বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
আগামী আরো কয়েক মাস সময় লাগতে পারে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান রক্ষনাবেক্ষনের কাজ সম্পন্ন হলে সাধারণ প্রাকৃতিক দূর্যোগেও সংযোগ স্বাভাবিক থাকবে। লোড শেডিং কিংবা সিষ্টেমলস বলতে কিছুই থাকবে না।
আর বৃহৎ এ সার্থের জন্য সাময়িক কিছুটা অসুবিধা মেনে নিতে হবে। তবে দৈনন্দিন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ বন্ধের পরিমান কয়েক ঘন্টা কমিয়ে আনা সহ রক্ষনাবেক্ষন কাজ দ্রুত শেষ করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
-মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা, খুলনা
(15)