পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা জনিত কারণে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে নবজাতকের পিতা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড গোপালপুর গ্রামের মৃত সাজ্জাত আলী সরদারের ছেলে আবু দাউদ সরদার পাইকগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার, ডাঃ সুজন কুমার সরকার, নার্স সুমাইয়া, হামিদা ও রেহানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, অসদাচরণ ও চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ আনেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী ফাতেম বেগমকে ডেলিভারীর জন্য গত ১৬ জানুয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। আমার স্ত্রী একজন মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার কার্ড ধারী। যার রেজিষ্ট্রশন নং- ৪৭৬৪-১০১৮/০৮/২০, তাং- ০৫/০৮/২০ইং। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমার স্ত্রীর পরীক্ষা নিরিক্ষা থেকে শুরু করে ঔষধ পত্র সহ সিজারিয়ান সরকারিভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বহন করার কথা। অথচ এর কোন কিছুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করে নাই। সমস্ত পরীক্ষা নীরিক্ষা ও ঔষধ আমার নিজ খরচে বাইরে থেকে করতে হয়েছে। ভর্তির আগে হঠাৎ একদিন আমার স্ত্রী অসুস্থ্য হলে প্রাক্তন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাসকে দেখাই।
তিনি যে পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয় সেই রিপোর্ট নিয়ে হাসপাতালের ডাঃ সুজনের নিকট গেলে তিনি সকল কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। হাসপাতালে ভর্তির পর ওই দিন দুপুরে সিজার করার কথা বললেও দুপুরে না করে রাতে করবেন বলে জানান। এরপর রাতেও সিজার না করায় বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদারকে অবহিত করলে তিনি বলেন, তোর ইচ্ছামত রোগী অপারেশন করবো নাকি। সিজার নয় তোর স্ত্রীকে টেনে হিচড়ে ডেলিভারী করবো। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ডাঃ সুজনকে বললে তিনিও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে ওই দিন প্রয়োজনীয় কাজে সেনাবাহিনীর গাড়ি হাসপাতালে আসলে বিষয়টি আমি তাদেরকে অবহিত করবো এমন কথা শুনে দুপুরের দিকে স্ত্রীকে সিজার করে এবং আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। দেরিতে সিজারিয়ান করায় আমার নবজাতক পুত্রের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সকে জানালেও তারা আমার নবজাতক সন্তানের দিকে কোন খেয়াল করে নাই। বিষয়টি পৌর মেয়রকে জানালে তার কথা মতো নবজাতক শিশুকে খুলনায় রেফার্ড করে। ১৮ জানুয়ারী দুপুরে আমি তাকে খুলনা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই আমার নবজাতক সন্তানটি মারা যায়। মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে ওখানকার চিকিৎসকরা বলেন, বিলম্বে সিজারিয়ান করা শ্বাসকষ্ট অবস্থায় স্যালাইন দেওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার এবং নার্সদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন নবজাতকের পিতা। এ ব্যাপারে নবজাতকের পরিবারের সাথে কোন কথা হয়নি এবং আনিত অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবী করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নীতিশ চন্দ্র গোলদার।
(15)