

‘তারপরও দেখি কেউ কেউ অসন্তুষ্ট। তাদের অসন্তোষ যায় না। কেন অসন্তোষ এটা আমার কাছে বোধগম্য না। পেটে যখন খাবারের টান থাকে, তখন পেটের খাবারের কথা চিন্তা থাকে। সেই পেটের খাবারের চিন্তা আমরা দূর করে দিয়েছি বলে, এখন প্রেস্টিজ নিয়ে টানাটানি- এটাই বাঙালির স্বভাব।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কোনো কিছুতেই বোধ হয় সুখী করা যায় না, এটাই বোধ হয় আমাদের দুর্ভাগ্য। যতই দেই, কিছু কিছু লোক কেন জানি সুখী হয় না। কেন হয় না সেটাই হচ্ছে আমাদের চিন্তার বিষয়।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
জনসভাস্থলে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জনসভাস্থল পূর্ণ হয়ে যায় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে।
১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সময়ে ১৯টি ক্যু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময়ে প্রচুর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের লাশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। উচ্চ আদালত সেই বিষয়ে রায় দিয়েছেন। ফলে উচ্চ আদালতের রায় মানলে জিয়াউর রহমানকে এখন আর রাষ্ট্রপতি হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না। একইসঙ্গে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় গিয়ে যে দল গঠন করেছেন, সেই দলকে অবৈধ বলে গণ্য করা উচিত।
‘মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে ২২ হাজার লোককে বন্দী করা হয়। এর মধ্যে ১১ হাজারের সাজা হয়। সে সময় গোলাম আযম পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে সময় যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ছিল না। সেই গোলাম আযমকে জিয়াউর রহমান দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। আর খালেদা জিয়া তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু করে। ২০০৯ সালে এসে যুদ্ধপরাধীদের বিচার শুরু করে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার পর অনেক মহল এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। কিন্তু কোনো মহলের ষড়যন্ত্রই সেই বিচারকাজ বন্ধ করতে পারবে না।
পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফেরেন। এই দিনটির স্মরণে রোববার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ওই দিন ইজতেমার আখেরি মোনাজাত থাকায় আজ জনসভা করেছে আওয়ামী লীগ।
(7)