এ কথা আরও কারও নয়, সিরিয় শিশু আয়লান কুর্দির শেষ কথা ছিল ‘বাবা দয়া করে মারা যেও না’। পানিতে ডুবে মরা থেকে স্ত্রী-সন্তানদের বাঁচাতে বাবা আব্দুল্লাহ কুর্দি যখন সংগ্রাম করছিলেন তখন এ কথা বলে ছোট্ট আয়লান। এমনটাই বলেছেন আয়লানের ফুফু টিমা কুর্দি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
টিমা কুর্দি জানান, বুধবার সকালে আব্দুল্লাহ ও স্ত্র-সন্তানদের বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকাটি ডুবে গেলে আব্দুল্লাহ স্ত্রী ও ২ সন্তানকে পানিতে ডুবে মরে যাওয়া থেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি একে একে নিজ তাদেরকে মরে যেতে দেখেন।
টিমা কুর্দি বলেন, নৌকাটি ঢেউয়ের কারণে উল্টাইয়া গেলে আব্দুল্লাহ কুর্দি তার ২ সন্তানকে দুই বাহুতে আগলে রাখেন। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি।ওই সময় আব্দুল্লাহর সন্তানরা এই বলে চিৎকার করেছিল ‘বাবা দয়া করে মারা যেও না’।
এ ঘটনার পর তুরস্কের একটি সৈকতের তীরে ৩ বছরের শিশু আয়লানের নিথর দেহ ভাসতে দেখা যায়। যা বিশ্ববাসীকে মর্মাহত করেছে। চোরাকারবারিদের সাহায্যে গ্রিসের কস দ্বীপে পৌঁছার জন্য নৌকায় উঠেছিল আব্দুল্লাহ ও তার পরিবার। সেখান থেকে কানাডা যাওয়ার কথা ছিল তাদের।
এদিকে অন্য এক সাক্ষাৎকারে টিমা কুর্দি ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তানদের মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, আমার ভাই গরিব ছিল, তাই সে চোরাই পথে কানাডা গিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। আর এ জন্য আমি তাকে টাকা দেই। আমি যদি টাকা না দিতাম তাহলে তারা চোরাইপথে কানাডা যাওয়ার চেষ্টা করতো না এবং এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
প্রসঙ্গত, বুধবারের ওই নৌকাডুবিতে ১২ জনের প্রাণহানি ঘটে। যাদের মধ্যে শিশু আয়লান ও তার ৫ বছর বয়সী ভাই গালিপ এবং মা রেহান কুর্দি ছিলেন। নিজ শহর সিরিয়ার কোবানিতে শুক্রবার স্ত্র-সন্তানদের মাটি দেন আব্দুল্লাহ।
(0)