নেপালের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদেশ ভারত। তবে সম্প্রতি ভারত সরকার নেপালে জ্বালানি সরবরাহের ওপর অঘোষিত অবরোধ আরোপ করলে দুদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। নেপালে এ বিষয়ে জাতিসংঘে নালিশ জানিয়েছে। পাশাপাশি দিল্লি যদি পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি।
নেপালের নতুন সংবিধান প্রণয়নকে ঘিরে দেশটির সংখ্যালঘু মদেশীয়দের বিক্ষোভে ১১ দিন ধরে ভারত থেকে সে দেশে পণ্য যাতায়াত বন্ধ ছিল। নতুন সংবিধানে মদেশীয় ও থারুরা বঞ্চনার শিকার হবে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাষ্ট্রদূত দীপকুমার উপাধ্যায় বলেন, ‘নেপালকে দেওয়ালের দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক নয়। কত দিনে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, তা স্পষ্ট করা উচিত ভারতের। তা না হলে ভৌগোলিক অসুবিধা থাকলেও চীনসহ অন্য দেশগুলোর কাছে যেতে হবে নেপালকে।’
এদিকে নেপালের সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় নয়াদিল্লির একপেশে ভূমিকা ও ‘অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অবরোধ’ আরোপে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নেপালি কংগ্রেস (এনসি), কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনাইটেড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) ও ইউনিফাইড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-মাওইস্ট (ইউসিপিএন-এম)। নেপালি পার্লামেন্টের বৃহৎ এ তিনটি রাজনৈতিক দল ভারতবিরোধিতায় অভিন্ন অবস্থানও গ্রহণ করেছে।
এর আগে জাতিসংঘের সদ্যসমাপ্ত সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বাইরে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে এক বৈঠক করেন অধিবেশনে নেপালের প্রতিনিধিত্বকারী উপপ্রধানমন্ত্রী প্রকাশ মান সিং। ওই বৈঠকে নেপালের বিরুদ্ধে ভারতের অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অবরোধের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।
বৈঠকে নেপালের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অবরোধ আরোপের ফলে চারদিকে স্থল পরিবেষ্টিত দেশটিতে অপরিহার্য পণ্যের তীব্র সংকট শুরু হয়েছে। বৈঠকে বান কি মুন অপরিহার্য পণ্য প্রবেশে নেপালে বাধা ও এতে সৃষ্ট জটিলতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংবিধান নিয়ে দুদেশের তিক্ততার মধ্যে আজ সোমবার পেট্রোলিয়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ১০০টি ট্রাক নেপালে ঢুকেছে। মদেশীয় বিক্ষোভে নেপাল পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় ১১ দিন ধরে পাঁচটি চেকপোস্টই বন্ধ ছিল। তবে নতুন করে সরবরাহ শুরু হওয়ায় স্বস্তি এসেছে।
নেপালে ভারতের রাষ্ট্রদূত রঞ্জিত রাই এ দিন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে দেখা করে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজার, কাঠমান্ডু পোস্টের।-পরিবর্তন
(1)