সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি সাতক্ষীরা জেলাকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে। মিষ্টান্ন ও দুধের কারণে এই জেলার ব্যাপক সুনামও রয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু মানুষ চিংড়ি মাছেও জেলিসহ বিভিন্ন উপদ্রব দিয়ে থাকে। তালার জেয়ালা এলাকার দুধের জন্য অনেক সুনাম আছে। তারা দুধ উৎপাদন করে পুরস্কারও পেয়েছে। সেই এলাকার খামারিরা ক্ষতিকর জেলি দিয়ে দুধ তৈরী করছে। এটি চিন্তা করা যায়। সৃষ্টিকর্তা এটি একটি প্রাণীর মাধ্যমে আমাদের নিয়ামত হিসেবে দান করেছেন। সেটিও ভেজাল তৈরী করছি। সম্প্রতি ক্যান্সার, কিডনি জটিলতা, লিভার সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগ খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি খ্যাদ্যে ভেজালের কারণে বেশি হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল শুধু এই উপমহাদেশের কয়েকটি দেশে দেখা যায়। উন্নত দেশগুলো খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার বিষয়টি।কখন চিন্তাই করেনা। খাদ্যে ভেজাল এটি খুবই দু:খজনক। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আর কতটা করা যায়। মানুষের নৈতিকতা থেকে ঠিক না হলে বন্ধ করা কঠিন।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে যৌথ আয়োজনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনার সভাপতির বক্তব্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এসব কথা বলেন।
জেলা ক্যাবের সভাপতি অধ্যক আশিক ই এলাহীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আরিফুর রহমান।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কহিনুর ইসলাম, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহিম, পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল ইসলাম, সাতক্ষীরা র্যাব-৬ কোম্পানি কমান্ডার সাহেদুজ্জামান, জেলা সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা. জয়ন্ত সরকার, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন, জেলা সার এ্যাসোসিশনের বিশ্বজিৎ সাধু, এলপিজি গ্যাস ডিলার প্রাণ নাথ দাস, মুদি ব্যবসায়ীর সভাপতি মিহির সাহা, জেলা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাসেল, জেলা পল্লী চিকিৎসক কল্যাণ সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল গফ্ফার, সনাকের পবিত্র মোহন দাস, বাংলাদেশ বেতারের ফারুক মাহবুবর রহমান প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হাসান এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট উপস্থাপন করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান।
বক্তরা বলেন, সরকারি হাসপাতালে কোন রোগী গেলে সেখান থেকে দালালরা টেনে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা অপ্রয়োজনীয় পরিক্ষা-নিরিক্ষা দেওয়ার কারণে অনেক রোগী এবং তার পরিবার সর্বশান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের চিকিৎসকদের উপর আস্থা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সে কারণে রোগ হলেই বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
বক্তরা আরও বলেন, অনেক দেশে নিষিদ্ধ হলেও উপকূলের মানুষ ক্ষতিকর অ্যাসবেস্টস ব্যবহার করছে। কিন্তু সরকার এটি বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভোক্তার ক্ষতির দিক মাথায় রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেও চোখে পড়ে না। খাদ্যে ভেজালসহ বিভিন্ন ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে আরও বেশি বেশি অভিযান চালানো দরকার। অভিযান পরিচালনা করে সেটার ফলোআপ না থাকার ফলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। তারা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সেই ভেজালের কারবার করে যাচ্ছে।
জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, দুধের সাথে জেলিসহ বিভিন্ন উপদ্রব মিশিয়ে দুধ তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করি। ৯ টি অভিযানে ৩জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে ১১টি অভিযান চালিয়ে ৫জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আমার অভিযান নিয়মিত আছে। এছাড়া খাদ্যে ভেজাল রোধে ব্যবসায়ীদের সতেচন করে যাচ্ছি।
(0)