

বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ার ও হেফাজতে মোট ১৯২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ক্রসফায়ারেই ১৪৬ জন। বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয়ে ৫৫ জনকে আটক করা হয়; কিন্তু কোনো বাহিনী তার দায় স্বীকার করেনি। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে আটজনের লাশ পাওয়া গেছে, পাঁচজন ফিরে এসেছেন আর সাতজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আর মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ক্রসফায়ারে ১৪৮ জন, গুলিতে ২২ জনসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে ১৮৫টি।
আসক বলছে, ২০১৫ সালে বিভিন্ন বাহিনীর হাতে হেফাজতে ও ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ১৯২ জন। এর মধ্যে র্যাবের ক্রসফায়ারে ৫০ জন, পুলিশের ক্রসফায়ারে ৭০ জন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ক্রসফায়ারে ১৪ জন, যৌথবাহিনীর ক্রসফায়ারে ২ জন ও সেনাবাহিনীর ক্রসফায়ারে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নুর খান লিটন বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যারা এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তারা বিচারের বাইরে থাকাতেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তদন্তের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়ী সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সমঝোতা এবং জাতীয় ঐক্য দরকার। কেননা গণতান্ত্রিক শাসন ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে আসছে, জবাবদিহিতার অভাব দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। আর এ সুযোগে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়ছে বলে মনে করেন এ মানবাধিকার কর্মী।
প্রায় একই কথা বলেছেন, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে মানবাধিকার বেশ কয়েকটি দিকে অবনতি ঘটেছে। সুশাসন না থাকা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যদি ঠিক না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও সুশাসন নিশ্চিত, সেইসঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে বিচার বহির্ভূত হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না।
আসকের হিসাবে, ২০১৫ সালে দেশে ৮৬৫টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এতে মারা গেছে ১৫৩ জন আর আহত হয়েছে ৬,৩১৮ জন। এছাড়া ব্লগারদের ওপর হামলা ও হত্যা; সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হয়রানি ও মামলা; শিশু হত্যা, নারী নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, সীমান্ত হত্যা আলোচিত ছিল বছরজুড়ে।
(0)