

পশ্চিম সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমানসংস্থা কোগালিমাভিয়ার বিমানটি (যা মেট্রোজেট নামে পরিচালিত হয়) লোহিত সাগরের তীরবর্তী মিশরীয় পর্যটন শহর শার্ম আল-শেখ থেকে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের ২৩ মিনিট পরই মিশরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বিমানটি বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে উড্ডয়ন করে।
বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কেজিএল৯২৬৮ বিমানটি ৩১,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়ছিল।
এয়ারবাসের এ-৩২১ মডেলের বিমানটিতে ২০০ জন বয়স্ক লোক, ১৭টি শিশু এবং ৭ জন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের সবাই রাশিয়ার পর্যটক।
কায়রোতে রাশিয়ার দূতাবাস তাদের টুইটার একাউন্টে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘দুর্ভাগ্যবশত কোগালিমাভিয়া ৯২৬৮ বিমানের শার্ম আল-শেখ থেকে পিটার্সবার্গগামী সব যাত্রী মারা গেছেন। আমরা (নিহতদের) পরিবার এবং বন্ধুদের কাছে আমাদের শোক প্রকাশ করছি।’
মিশরের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিমানটি সিনাই উপত্যকার আল-আরিশ এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
সিনাই উপত্যকার হাসানা এলাকায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ এবং ব্ল্যাক বক্স পাওয়া গেছে।
সিনাইয়ে ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছে মিশর সরকার। সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
এর আগে একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইতোমধ্যেই ১০০ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আর কাউকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
‘আমি বিয়োগান্তক দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি। মাটিতে অনেক মরদেহ পড়ে রয়েছে। অনেকেই সিটে বাধা অবস্থায় মারা গেছেন,’ বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
বিমানটি দুই ভাগ হয়ে গেছে। এর এক ভাগ থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার করা মরদেহগুলো সামরিক বিমানে কায়রো এবং সিনাইয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে।
রাশিয়ার তিনটি বিমান ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন রোববার জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
২০১৩ সালের জুলাইয়ে মিশরের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সিনাই উপত্যকা ইসলামপন্থী জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে ঘাঁটি গেড়েছে ইসলামিক স্টেট। জঙ্গিদের হামলায় সিনাইয়ে মিশরের বহু সেনা ও পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে।
তবে আজকের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে জঙ্গি হামলার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।
মিশরের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, গুলি করে বিমানটি ভূপাতিত করা হয়নি। টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট নিকটবর্তী বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতি চেয়েছিলেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমান বিধ্বস্তের কারণ অনুসন্ধানে সরকারি তদন্তের এবং উদ্ধারকারীদের ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে উচ্চতায় বিমানটি ছিল সেখানে জঙ্গি হামলার সক্ষমতা সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য নেই।
সূত্র: বিবিসি
(1)