জানাগেছে, গত ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর কাছারী বাড়ী ঋষিপাড়ার নিখিল দাসের ছেলে সুজন দাস (১৩) দুপুরের খাবার শেষে পাশ্ববর্তী নুর মোহাম্মাদ সরদারের বেড়ের পাশে খেলতে যায়। খেলার সময় সুজন বেড়ের ওয়ালের উপরে উঠলে নুর মোহাম্মাদের ছেলে ইব্রাহিম প্রথমে তাড়া করে ধরতে না পেরে তার বাবা নুর মোহাম্মাদকে ডাক দেয়। নুর মোহাম্মাদ ‘‘মুচির বাচ্চারে ধর’’ বলে দৌড়ে এসে পাকা বাশেঁর লাঠি দিয়ে সুজনকে বাবা ছেলে মিলে বেদম মারপিট করতে থাকে। সুজনের চিৎকার চেঁচামেচিতে সুজনের বাবা নিখিল দাস ও মা গৌরি রানী দাস এগিয়ে এলে এলাকার প্রভাবশালী নুর মোহাম্মাদ তাদেরকেও মারপিট করে, জাত তুলে গালিগালাজ করে এবং গৌরি রানী দাসের শ্লীলতাহানী করে। একপর্যায়ে সুজন দাস জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ইউপি সদস্য মোঃ আঃ মজিদ খোকাকে ফোন করে। ইউপি সদস্য এসে তাদেরকে নিয়ে থানায় যায়। থানার কতর্ব্যরত কর্মকর্তা সুজনের অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। থানায় লিখিত অভিযোগ করলে থানা ঐদিন অভিযোগ আমলে না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়। পরে দলিত মানবাধিকার সংগঠন পরিত্রাণের পক্ষথেকে যোগাযোগ করা হলে পরের দিন মামলা গ্রহণ করে যার নং ৫-৪/১১/২০১৫। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আসামী পলাতক আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিখিল দাস বলেন, আমারা যে ঋষি, দলিত আমাদের কি আর মান সম্মান আছে । কিছু একটা হলে প্রায় নুর মোহাম্মাদ গালিগালাজ করে, এসে সকলের সামনে মারপিট করে। ওর যে টাকা পয়সা আছে কেডা কি বলবে। আমাদের যাতায়াতের রাস্তায় ওর ঘেরের পানিতে ডুবে থাকে আমরা বলতে গেলে জাত তুলে গালিগালাজ করে হুমকি দেয়। এই কেস করছি বলে হুমকি দিচ্ছে।
ইউপি সদস্য মো: আঃ মজিদ খোকা বলেন, নুর মোহাম্মাদ ধনাঢ়্য হওয়ায় সে বেপরোয়া, কাউকে মান্য করে না। এর আগেও সে ঋষিদের মারপিট করেছে। ঋষিরাও মানুষ তাদেরও একটা মর্যদা আছে। সে কারনে আমি চাই এর একটা সুষ্ঠ বিচার যেন এই ঋষিরা পায়। আমি থানায় খোঁজ নিয়েছি। থানা থেকে বলেছে আসামীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ দলিত পরিষদ (বিডিপি) তিব্র নিন্দা এবং এ ঘটনার মুলনায়ক নুর মোহাম্মাদকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃস্টান্তমুলক শাস্থির দাবী জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
বাহারুল ইসলাম, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
(68)