সিলেটে শিশু রাজন হত্যা মামলায় চার জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম, ময়না মিয়া, জাকির হোসেন পাভেল ও তাজউদ্দিন বাদল। এদের মধ্যে জাকির হোসেন পলাতক। ঘটনার চার মাসের মাথায়, রায় দিলেন আদালত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায় পেয়ে, সন্তোষ জানিয়েছে রাজনের পরিবার। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আদালতে হাজির করা হয় আসামিদের। পরে রায় পড়া শেষে, আদালত চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর ঘটনার একমাস আটদিনের মাথায় ১৬ ই আগষ্ট ১৩ জনকে অভিযুক্ত কোরে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় এর বিচার কাজ। রাজন হত্যা মামলায় ১৩ আসামীর মধ্যে প্রধান আসামী কামরুল সহ মোট ১১ জন গ্রেফতার হলেও এখনো পলাতক আছে শামিম ও পাভেল নামে দুইজন।
খুলনায় নির্মম কায়দায় শিশু রাকিব হাওলাদারকে (১২) হত্যার দায়ে দুই আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে একটি আদালত। খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলাতানা আজ এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শরীফ মোটর্সের মালিক ওমর শরীফ ও তার দূরসম্পর্কের চাচা মিন্টু মিয়া। বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম জানান, মামলার আরেক আসামি শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দিয়েছে আদালত। সিলেটে চুরির অপবাদে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর মাস না পেরোতেই গত ৩ আগস্ট খুলনায় রাকিব হত্যার ঘটনা ঘটে।
নগরীর টুটুপাড়া কবরস্থান মোড়ে ‘শরীফ মোটর্স’ নামে একটি ওয়ার্কশপে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেয়ার কম্প্রেসার মেশিনের মাধ্যমে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় রাকিবকে। রাকিব ওই ওয়ার্কশপে কাজ করত।
লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কম্প্রেসার মেশিনের মাধ্যমে দেয়া বাতাসের চাপে কিশোর রাকিবের পেটের ভেতরের নাড়ি, মলদ্বার, মুত্রথলি ফেটে অতিরিক্তি রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই ওমর শরীফ, তার মা বিউটি বেগম এবং দূরসম্পর্কের চাচা মিন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা নূর আলম হওলাদার ছেলে রাকিবকে হত্যার ঘটনায় ওই তিনজনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে তিন আসামিই রাকিবকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন।
গত ২৫ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এসআই কাজী মোস্তাক আহমেদ তিনজনকে আসামি করে খুলনা মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন। গত ৫ অক্টোবর খুলনা মহানগর ও দায়রা জজ আদালত বিচার শুরুর আদেশ দেয়। বিচার চলাকালে মামলার চার সাক্ষী নাদিম হাসান শাহীন, রবিউল ইসলাম, সুমন ও সেলিম হাওলাদার আদালতে জবানবন্দি দেন। যুক্তিতর্ক শেষে গত ১ নভেম্বর খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা রায় ঘোষণার দিন জানিয়ে দেন।