দক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, যে কারণে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শাসনকে এ দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর কাঁধে সেই স্বৈরাচারের ভূত চেপেছে। তারা ফ্যাসিবাদের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে এখন দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সোমবার রাতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিরোধী দল সংবিধান স্বীকৃত সকল রাজনৈতিক অধিকার থেকে এখন বঞ্চিত। দেশে গণতন্ত্রের লেশ চিহ্ন নেই। মৌলিক ও মানবাধিকার আগেই ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। আইন-আদালতও এখন শাসকগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। শাসকগোষ্ঠী দেশে এক শ্বাসরুদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ছাড়াও দেশের কোনো মানুষই এখন নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না।’
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিনা ভোটের সরকার বিরোধী দলের কর্মী ও নেতৃবৃন্দের নামে বানোয়াট, ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সারাদেশে গত কয়েক সপ্তাহেই এ ধরনের মিথ্যা মামলায় প্রায় তিন সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে নতুন করে আটক করেছে। আইন আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও তাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা এখন সরকার রেওয়াজে পরিণত করে ফেলেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব এম কে আনোয়ারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বেলায় একই ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের কাছে সম্মানিত হিসেবে বিবেচিত এ সব রাজনীতিকদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার মতো মিথ্যা অভিযোগে আটক করা সুস্থ রাজনীতির ঘটনা নয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার কোনোভাবেই বিরোধী মতকে সহ্য করছে না এবং তারা গণতন্ত্রের সকল ক্ষেত্রকে সংকুচিত করতে করতে এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থার পথেই দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।’
দমন-নিপীড়ন, হামলা-মামলার পথে থেকে সরকার সরে না আসলে তারা আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকার যেভাবে দেশের মানুষকে, গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে, তা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়।’
সারাদেশে যে গণগ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে অবিলম্বে সেটি বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে আটক বিরোধীদলীয় সকল কর্মী ও নেতার আশু মুক্তি দাবি করে সকল প্রকার হয়রানি, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
(4)