ঢাকায় মৈত্রী দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হয়েছে। ভারতীয় হাই কমিশন এ দিবসের আয়োজন করে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দশ দিন আগে ভারত একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে।
দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও শিল্প নেতৃত্ব, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণও এই উদ্যাপনে যোগ দেন।
বক্তব্য প্রদানকালে, হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের বিগত ৫১ বছরের অর্জনসমূহ এবং ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করার সুযোগ হিসেবে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বকে ১৯৭১ সালের যৌথ আত্মত্যাগের মূলে নিহিত এবং ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতির দৃঢ় বন্ধনে লালিত বলে বর্ণনা করেন।
বিগত ৫০ বছরে উভয় দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ অর্জন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি দেশ দুইটির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কর্তৃক ১৯৭১ সালের ইতিহাস অনুধাবন করা ও সেই ঐতিহ্যের ধারা অক্ষুন্ন রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে মৈত্রীর ক্ষেত্রে ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে এবং সবসময় বৃহত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্যের পথে বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে প্রস্তুত থাকবে।
দ্বিপাক্ষিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও নীতির সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে সৃষ্ট এই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে উভয় দেশের অঙ্গীকারকে আবারও নিশ্চিত করে ভারতীয় ও বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দলের বর্ণাঢ্য পরিবেশনার মধ্যদিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পুরোপুরি মুক্ত হওয়ার ১০ দিন আগে ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছর মার্চ মাসে ঢাকা সফরের সময়ই ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক তা গৃহীত হয়। এরই আলোকে স্বাধীনতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীতে গত বছর এই দিনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে মৈত্রী দিবস হিসেবে পালন করেছে। যদিও ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়ার দিনটি ২০২১ সালের আগে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন পালন করে আসছিল।
(3)