বাংলাদেশ যখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রশংসিত হচ্ছে তখন এ বাংলার মমতাময়ী নারীকে হতে হচ্ছে কারো লালসার শিকার না হয় হাসপাতালের শয্যাশয়ী। আর সেকারনে ভাবতে বাধ্য করে আধুনিক সভ্যতা হার মানছে জাহেলিয়া। এদেশে এখনো চলছে বর্ণবাদের দাপটতা। তবে লালসার ক্ষেত্রে সে বর্ণবাদের দাপটতা লোপ পায়। সাতক্ষীরা জেলা তালা থানায় এমনই এক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কলাপোতা গ্রামের দলিত নারী অলোকা দাস (২৪) গত ১০ নভেম্বর সাড়ে চারটার দিকে পার্শ্ববর্তী আমানুল্লাহপুর বাজারে আনন্দ দাশ ওরফে মৎস্যদাশ (২৫) এর একটি রেস্টুরেন্টের বকেয়া পরিশোধ করেতে য়ায়। কিন্তু খুচরা টাকা না থাকায় ১২ টাকার স্থলে ১০ টাকা দিয়ে ২ টাকা পরে দেবে বলে চলে আসতে চাইলে আনন্দ দাশ তার প্রস্তাবটি ভেবে দেখতে বলে। অর্থাৎ এই টাকা আদায়ের বাহানায় আনন্দ দাশ অলোকা দাসের বাড়ীতে যায় এবং সেখান থেকে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। আননন্দ দাশের উদ্দেশ্য টের পেয়ে অলোকা দাস বাকী ২ টাকা নিয়ে দোকানের ক্যাশটেবিলের পাশে রেখে চলে আসতে চাইলে আনন্দ দাশ তাকে জাপটে ধরে দোকানের ভিতরে নেওয়ার টেস্টা করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দোকানে থাকা লোহার রড দিয়ে অলোকা দাসের মাথায় আঘাত করলে সে জ্ঞান হারায়। অলোকা দাসের স্বামী চৈতন্য দাস (৩৪) লোক মুখে শুনে দৌড়ে গিয়ে তার স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকে আনন্দ দাশ এবং হাতুড়ে ডাক্তার সরজিত দাশ রাম দা দিয়ে এলাপাতাড়ি আঘাত করে। চৈতন্য দাসের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলে এলাকার প্রভাবশালী নেতা লক্ষণ চক্রবর্তীসহ তার সহযোগীরা বাধা দেয়। বাধ্য হয়ে তারা স্থানীয় ডাক্তার আক্তারের এর কাছে প্রথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে। ১২ নভেম্বর বৃহ:বার অনুমান রাত সাড়ে নয়টায় স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি আবদুল করিম খোকন এবং সেক্রেটারী অশোক দাশ সহ অভিযুক্তরা গভীর ষড়যন্ত্র করে ন্যায়বিচারের নামে প্রহসনের সালিশ বসায়। সালিশে অলোকা দাস ও তার স্বামী চৈতন্য দাস সহ দলিত (ঋষি) সম্প্রদায়ের নিকট থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অপ চেষ্টা চালায়।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, বাজার কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারী সহ প্রভাবশালীরা মিথ্যা মামলা, গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি প্রদান করে যাতে অলোকা দাস ও তার স্বামী চৈতন্য দাস সহ দলিত (ঋষি) সম্প্রদায়ের লোকেরা আইনগত বিচার প্রার্থনা না করে। অপরদিকে অলোকা দাস এর অবস্থা গুরুতর হলে গোপনে তার স্বামী তালা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অত্র এলাকায় সমাজের অচ্ছ্যুত ঋষি সম্প্রদায়ের লোকদেরকে বহুকাল ধরে উক্ত বাজারের চায়ের দোকানে, হোটেল, সেলুন, রেস্টুরেন্টে ঢুকতে দেয় না। সামাজিক অনুষ্ঠান, সনাতনধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের ভর্তিসহ স্থানীয় নেতৃত্বেও তারা কোন প্রতিনিধিত্ব দেয়ার সুযোগ পায় না । এমনকি এই গ্রামের মধ্যকর বিষয়গুলো নিয়ে ঐ বর্ণবাদী প্রভাবশালীগোষ্ঠী তাদের নেতৃত্ব মানতে বাধ্য করায়। এলাকার হাতুড়ে ডাক্তার ডা: সরজিত চিকিৎসার নামে প্রতারিত করে নিম্মমানের ঔষধ দ্বিগুণ দামে বিক্রি করে। আবার সেই টাকা নগদ প্রদান করতে ব্যর্থ হলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ নিয়ে থাকে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে মানবাধিবার সংগঠন পরিত্রাণের সহযোগিতায় তালা থানায় এজাহার দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।