সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরায় বাঁধ ও ঘাটলা পুনর্বাসনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক কাজের আওতায় বালু দিয়ে উপকূল রক্ষা বাঁধ তৈরীর অভিযোগ উঠেছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী শতকরা পঁয়ত্রিশ ভাগ বালু ব্যবহারের নির্দেশনা থাকার অজুহাতে ঠিকাদারের লোকজন নির্মানাধীন বাঁধে ঐ বালু ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ। এদিকে মেগা প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক বালুর ব্যবহার করে বাঁধ নির্মানের ঘটনায় আপত্তি জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি নির্মানাধীন নুতন টেকসই প্রযুক্তির বাঁধে উম্মুক্তভাবে বালু ব্যবহারের ফলে ঝুঁকি বাড়বে। প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারপাশে নদীবেষ্ঠিত গাবুরা এলাকার উপকুল রক্ষা বাঁধ নুতনভাবে তৈরীতে কতৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
জানা যায়, উপকুলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছায় ২০২২ সাল থেকে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরায় নুতন ডিজাইনে উপকুল রক্ষা বাঁধ নির্মান শুরু হয়। ষাটের দশকে নির্মিত বাঁধ অব্যাহতভাবে ভীতি ছড়ানোর কারনে উচ্চতা ও উভয় পাশের স্লোব বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই প্রযুক্তিতে নির্মিত নুতন বাঁধ ব্লকে মুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। স্থায়ীত্বের সাথে নদী শাসন আর নির্মান কাজের সুবিধার্থে গাবুরাকে ঘিরে থাকা ১৫ নম্বর পোল্ডারের বাঁধ ৪৭টি প্যাকেজে ভাগ করার পর কয়েক মাস আগে দু’টি প্যাকেজের কাজ শুরু হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে গাবুরার ২ নং ওয়ার্ডভুক্ত এলাকার নার্সিং পয়েন্ট অংশে ২শ মিটার জায়গাজুড়ে নুতন বাঁধ নির্মান কাজে ব্যাপকভাবে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। উপরিভাগের মাটি দু’পাশে সরিয়ে দিয়ে বাঁধের মধ্যভাগে পাশের নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের সহায়তায় সরাসরি বালু ফেলা হচ্ছে। মধ্যভাগে উম্মুক্তভাবে বালু ব্যবহারের ফলে নির্মানাধীন বাঁধ ভবিষ্যতে হুমকির মুখে পড়বে বলে দাবি স্থানীয়দের।
গাবুরা গ্রামের মো: রোকনুজ্জামান জানান মাটি দিয়ে বাঁঁধ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে যেয়ে তারা বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের ঘটনায় হতবাক হয়েছেন। এলাকাজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টির পর বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষসহ চেয়ারম্যান-মেম্বরকে জানানো হয়েছে। কৌশলে বাঁেধর মধ্যে বালু ব্যবহার করা হলে ভবিষ্যতে ভয়ানক পরিনতি ভোগ করতে হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: গোলাম মোস্তফা জানান টেকসই বাঁধ তৈরীর নামে উপরের মাটি দু’পাশে সরিয়ে দিয়ে মাঝ বরাবর বালু ফেলা হচ্ছে। পরবর্তীতে ঐ বালুর উপর দিয়ে মাটি ফেলার পর সেখানে ব্লক স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে কর্মরত শ্রমিকরা। তিনি জানান ঠিকাদারের লোকজন শতকরা ৩৫ ভাগ বালু ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে দাবি করলেও তার চেয়ে ঢের পরিমানে বালু বাঁধের মধ্যে ফেলা হচ্ছে। এবিষয়ে স্থানীয়দের পাশাপাশি তিনিপানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্থাদের কাছ অভিযোগ দেয়ার পর শুক্রবার থেকে ঐ অংশে বালু ফেলার কাজ বন্ধ রয়েছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ম্যানেজার মো: মঈন হোসেন জানান, কার্যাদেশ অনুযায়ী তাদের শতকরা ৩৫ভাগ বালু ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। বিষয়টি তদারকির দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অবগত থাকায় তারা বা৭ধের উপর নির্দেমনার সম পরিমান বালু ফেলছে। তবে উম্মুক্তভাবে বালু ঝুঁকির তৈরী করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুল ইসলাম জানান নুতন বাঁধে উম্মুক্ত কোন বালু ব্যবহারের সুযোগ নেই। স্থানীয়দের আপত্তির কারনে আপাত সেখানে কাজ স্থগিত রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কার্যাদেশে কি রয়েছে সেটা দেখে ঠিকাদারকে কাজের অনুমতি দেয়া হবে।
সেখানে কাজ করবে। বালু ব্যবহার করতে পারবে না। বালু জিও ব্যাগের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পড়তে পারে বলে শংকা স্থানীয়দের। এদিকে টেকসই উপকুল রক্ষা বাঁধ নির্মান কার্যক্রমে বালুর ব্যাপক ব্যবহারের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে পরিবেশবিদ ও বিশিষ্টজনেরা।
বাঁধের ব্লকে মুড়িয়ে ফেলার কার্যক্রম ব্লকে মুড়িয়ে টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য গোটা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সর্বশেষ জনপদ গাবুরাকে ঘিরে থাকা ১৫ নম্বর পোল্ডারকে সর্বমোট ৪৭টি প্যাকেজে ভাগ করে উচ্চতা ও উভয় পাশে বৃদ্ধিসহ নুতন ডিজাইনের বাঁধ ও ঘাটলা পুনর্বাসনসহ গত বছর থেকে এক যুগ আগে ঘটে যাওয়া প্রলয়ংকরী আইলার আঘাতের পর থেকে প্রায় প্রতি বছর শ্যামনগরের সবচেয়ে বেশি জনগোষ্ঠীর বসবাসের গাবুরা ভাঙনের কবলে পড়ে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসসহ যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সারাক্ষণ তটস্থ থাকে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গপোসাগর তীরবর্তী আলোচিত এ জনপদ।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরায় বালু দিয়ে উপকুল রক্ষা বাঁধ তৈরীর কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। দু’পাশে মাটি রেখে মাঝ বরাবর উম্মুক্তভাবে ব্যাপক পরিমানে বালু ফেলে ঐ বাঁধ তৈরী হচ্ছে বলে অভিযোগ। এদিকে স্থানীয়রা জানায়, পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে ড্রেজিং মেশিনের সহায়তায় পাইপের মাধ্যমে বালু নিয়ে নির্মানাধীন বাঁেধ দেয়া হচ্ছে। মধ্যভাগে উম্মুক্তভাবে বালু ব্যবহারের ফলে নির্মানাধীন বাঁধ ভবিষ্যতে হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে শংকা স্থানীয়দের। এদিকে টেকসই উপকুল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রমে বালুর ব্যাপক ব্যবহারের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে পরিবেশবিদ ও বিশিষ্টজনেরা।
জানা যায়, উপকূলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৫নং পোল্ডারের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় গাবুরাকে ঘিরে থাকা প্রায় ৩০ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বাঁধের পাঁচটি পয়েন্টে কাজ শুরু হয়েছে। অংশে বাঁধ ও ঘাটলা পুনর্বাসনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষামুলক কাজ শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা সাব-ডিভিশন-১ এর আওতায় গাবুরা গ্রামের ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার বাড়ি সংলগ্ন নার্সিং পয়েন্ট অংশের ২শ’ মিটার বাঁধে বর্তমানে বালু ভরাটের কাজ চলছে।
(3)